‘আমি প্রতিবন্ধী মানুষ। কুনু কাম কাজ করবার পারি না। মাইনস্যে যা দেয় হেইডা দেয়াই চলি। আমগর থাকবার গর নাই, জায়গা-জমি নাই। ইউনু (ইউএনও) ছার (স্যার) কইছে, আমারে একটা গর দিব। আমি অনেক খুশি। আমরা দালান গর-অ থাকাবার পারাম। আমি প্রধানমন্ত্রী, ইউনু ছারের লাইগ্যা দোয়া করি। আল্লায় যেন তাগরে বালা রাখে। তারা যেন অনেক দিন বাচে।’ কথাগুলো বলছিলেন, ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বিরুনীয়া গ্রামের মো. তাইজ উদ্দিনের ছেলে মো. জান্নাত হাসান। তার বয়স প্রায় ২০বছর। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার চারটি হাত-পা বাঁকা। কখনো সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। দুই পা আর কাঠের ছোট্ট একটা পিঁড়ির উপর এক হাতে ভর দিয়েই তার চালাচল। শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও জান্নাত হাসানের মনের জোর অনেক বেশী। তার সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা চার ভাইবোন। বোনের বিয়ে হয়েছে। অপর দুই ভাই তার ছোট। তারা একজন মাদরাসায়, অপরজন একটি কেজি স্কুলে লেখাপড়া করে। মা মাসুদা খাতুন গৃহিনী। দরিদ্র বাবা তাইজ উদ্দিন ভালুকায় ঝালমুড়ি বিক্রি করেন। বাবার সামান্য আয় দিয়ে সংসার চলে না। তার নিজের কিছু করার ক্ষমতাও নেই। তাই উপায়ন্ত না দেখে তিনি ভিক্ষা করার পথ বেছে নিয়েছেন। জান্নাত হাসান দিনের বেশীরভাগ সময় ভালুকা পৌর সভার শহীদ মান্নান সড়কের তানিয়া স্টোরের সামনে বসে ভিক্ষা করেন। আর জোহর এবং আসরের নামাজ শেষে ভালুকা বাসস্ট্যান্ড মজিদের কাছে বসেন। তাকে দেখে দয়াপরবশ হয়ে পথচারীরা যে-যা দেন তাই তিনি হাত বাড়িয়ে নেন। তবে, বেশী রোজগারের আশায় মাসের প্রথম সপ্তাহে তিনি শিল্পাঞ্চল হিসাবে খ্যাত ভালুকা উপজেলার মাস্টারবাড়ি এলাকায় যান। ভিক্ষায় তার দৈনিক গড়ে প্রায় দুই থেকে আড়াই শত টাকা রোজগার হয়। তবে, কোন কোন জুম্মার দিনে ৫-৬শ টাকাও হয়ে যায়। প্রতিবন্ধী হিসাবে সরকারের নিকট থেকে পাওয়া ভাতা ও ভিক্ষায় করা উপার্জনের সমুদয় টাকা সংসারের কাজে ব্যয় করার জন্য তিনি তার বাবার হতে তুলে দেন। তাদের নিজের কোন জায়গা জমি নাই। একসময় তারা উপজেলার বিরুনীয়া গ্রামে তার বাবার মামার বাড়িতে বসবাস করতেন। বর্তমানে তারা ভালুকা পৌর সভার ফায়ার সার্ভিস এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে ভূমিহীনদের ভূমি ও গৃহ প্রদানের খবর জানতে পারেন জান্নাত হাসান। সেই থেকে তার মাঝে সরকারী একটি ঘর পাওয়ার ইচ্ছা জাগে। এমতাবস্থায় তিনি পূর্বপরিচিত স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর (কালের কন্ঠ) কাছে তার ইচ্ছের কথাটি জানান। পরে ওই সংবাদকর্মীর মাধ্যমে ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা খাতুন শারীরিক প্রতিবন্ধী জান্নাতের বিষয়টি জানতে পারেন এবং জান্নাতকে তার অফিসে পাঠানোর জন্য বলেন। পরে, জানাত হাসান অফিসে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা খাতুনের সাথে দেখা করেন। ওই সময় জান্নাত হাসানের সাথে কথা বলে তাকে এক মাসের মধ্যে একটি ঘর ও খাস জমি পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করার কথা জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আশ্বাসে খুশিতে আটখানা জান্নাত ফোন করে তার ঘর পাওয়ার আশ্বাসের বিষয়টি তার পরিচিত ওই সংবাদকর্মীকে জানান। তানিয়া স্টোরের মালিক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ছেলেটি অনেক দিন যাবৎ আমার দোকানের সামনে বসে ভিক্ষে করে। কিন্তু কোন দিন তাকে কারো কাছে ভিক্ষার হাত বাড়াতে দেখিনি। একটা বসত ঘরের ব্যবস্থা হলে তার অনেক উপকার হবে এবং তার দ্বারা করার মত কোন কাজের ব্যবস্থা হলে সে ভিক্ষা করা ছেড়ে দিবে বলে আমাবে বারবারই বলে।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা খাতুন কালের কণ্ঠকে জানান, প্রতিবন্ধী জান্নাত হাসানের বিষয়টি জানা থাকলে অনেক আগেই তাকে একটি ঘর পাইয়ে দেওয়া যেতো। একজন সাংবাদিকের মাধ্যমে তার বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। তবে, নিজের আইডি কার্ড না থাকায় সে তার বাবার আইডি কার্ড জমা দিয়ে গেছে। আগামী এক মাসের মধ্যে তাকে একটি ঘর পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো।
Огляд ВБЕТ UA 2023. VBET UKRAINE POMOCODES та BONUS на v-bet.biz.ua. Заходьте, реєстрація в Україні. Все, що вам потрібно для успішної гри з V -BET Casino!
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.