আজ ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

পরীমনির বিরুদ্ধে মাদক মামলা চলবে কি না, শুনানি ৯ জানুয়ারি

ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলা নিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিলের বিষয়ে শুনানির জন্য পিছিয়ে আগামী ৯ জানুয়ারি ঠিক করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

শুনানির নির্ধারিত দিন সোমবার (২ জানুয়ারি) আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ দিন ঠিক করেন। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম (জেডআই) খান পান্না।

গত বছরের ৭ মার্চ পরীমনির বিরুদ্ধে হওয়া মাদক মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ সেলিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। পরবর্তীসময়ে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

এরপরে পরীমনির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলা নিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ ছয় সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। ফলে বিচারিক আদালতে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

গত ৮ মার্চ বিকেলে আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের চেম্বার জজ আদালতে এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন।

আদালতে ওইদিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল ও সিনিয়র আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। তাদের সঙ্গে ছিলেন সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মিজানুর রহমান। অন্যদিকে পরীমনির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম(জেড আই) খান পান্না ও অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন।

ওইদিন আদেশের বিষয়টি পরীমনির আইনজীবী মো. শাহিনুজ্জামান শাহীন এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গত ১ মার্চ পরীমনির বিরুদ্ধে বনানী থানায় করা মাদক মামলার কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ ও মামলা কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।

হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. সেলিমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে ৭ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে, যার শুনানির জন্য গত ৮ মার্চ দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। তারই ধারাবাহিকতায় সেটি শুনানি হয়।

২০২১ সালের ৪ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী মোস্তফা কামাল পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

এরপর একই বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত শিকদারের আদালত পরীমনির ব্যবহৃত গাড়ি, মোবাইলফোন, ল্যাপটপসহ জব্দ করা ১৬টি আলামত তাকে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

ওই বছরের ১৯ আগস্ট ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলামের আদালত পরীমনির একদিন, ১০ আগস্ট ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাসের আদালত দুইদিন ও গত ৫ আগস্ট একই মামলায় পরীমনির চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ। তিন দফায় পরীমনিকে মোট সাতদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।

এর আগে গত ২০২১ সালের ৪ আগস্ট রাতে প্রায় ৪ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে বনানীর বাসা থেকে পরীমনি ও তার সহযোগীকে আটক করে র‌্যাব। তার বাসা থেকে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয় বলে জানানো হয়। আটকের পর তাদের নেওয়া হয় র‌্যাব সদর দপ্তরে। পরে র‌্যাব-১ বাদী হয়ে মাদক আইনে পরীমনির বিরুদ্ধে মামলা করে।

মামলা হওয়ার দুই মাসের মাথায় গত ৪ অক্টোবর আদালতে পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগপত্রে ১৯ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, পরীমনির বাসা থেকে জব্দ মাদকদ্রব্যের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে সিআইডিকে জানানো হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পরীমনির নামে মদ জাতীয় পানীয় সেবনের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। গত বছরের ৩০ জুন ওই লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়। পরীমনি বিভিন্ন স্থান থেকে এ মামলার দুই আসামি আশরাফুল ইসলাম ও কবির হোসেনের মাধ্যমে অবৈধ মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে বাসায় রেখেছিলেন। মাদকদ্রব্য রাখার বিষয়ে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। এছাড়া পরীমনি তার গাড়িটি মাদকদ্রব্য বহনের কাজে ব্যবহার করতেন।

Leave a Reply

     এই বিভাগের আরও খবর