মোঃ আইয়ুব হোসেন পক্ষী, বেনাপোল.প্রতিনিধিঃ-আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। দীর্ঘ নির্বাসন শেষে ১৯৮১ সালের ১৭মে তিনি দেশের মাটিতে ফিরে আসেন। ১৯৮১ সালের এইদিন বিকাল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং বিমানে ভারতের রাজধানী দিল্লী হয়ে তৎকালীন ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান শেখ হাসিনা। ওই দিন বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে একনজর দেখতে রাজধানী ঢাকায় ছুটে আসেন শত শত মানুষ। সব প্রতিকূলতা উড়িয়ে কুর্মিটোলা বিমানবন্দর পরিণত হয় জনসমুদ্রে।
দিবসটি উপলক্ষে আ.লীগের শীর্ষ নেতারা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি মাইলফলক বলে উল্লেখ করেছেন। উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে তার ধানমন্ডির ৩২ নং বাড়ীতে হামলা চালিয়ে সপরিবারে হত্যা করে কয়েকজন দু:স্কৃতকারী সেনাসদস্যরা। এ সময় তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রবাসে থাকায় ঘাতকদের হাত থেকে রেহাই পান তারা।
দেশে ফেরার আগে ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হয় আ.লীগের কাউন্সিল অধিবেশন। ঐ অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। দেশে ফিরে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, “বাংলার মানুষের পাশে থেকে মুক্তির সংগ্রামে অংশ নেওয়ার জন্য আমি দেশে এসেছি. আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসিনি, আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে আপনাদের পাশে থাকতে চাই”।
প্রিয়জনদের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ভাই রাসেল আর কোনও দিন ফিরে আসবে না, আপা বলে ডাকবে না, সব হারিয়ে আজ আপনারাই আমার আপনজন।প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বেনাপোলে এক আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড ও মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম,বেনাপোল,যশোর।
মঙ্গলবার(১৭ মে) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে বেনাপোল বাজারস্থ সোনালী ব্যাংক কার্যালয় সংলগ্ন বেনাপোল-যশোর মহাসড়কে এই দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে অতিথি বর্গের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-বীর মুক্তিযোদ্ধা:-মোহাম্মাদ আলী(সহকারী কমান্ডার,শার্শা),শাহ আলম হাওলাদার(কমান্ডার,বেনাপোল,পুটখালী কমান্ড),আব্দুল মান্নান,সহকারী কমান্ডার,দ্বীন মোহাম্মাদ(বাহাদুরপুর,কমান্ড), মোঃ আব্দুল লতিফ(সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবীদ),মোঃ আব্দুল হামিদ(সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে আরও রয়েছেন- সাদিপুর গ্রামের-কামাল,ইয়াছিন,রিয়াজুল বাবু, মাহবুব,সেলিম। নামাজগ্রাম,দুর্গাপুর গ্রামের-বাককা,ইয়ার আলী,আকবর সৌরভ। বেনাপোল-মহাতব,সিরাজুল,সামু মোড়ল,আলম ওবায়দুল,বাক্কা, আলী,শাহজামাল,শওকত জাহাঙ্গীর, কাগজপুকুর-জুলফিকার আলী জুলু,আব্দুল জলিল,আমিনুর। দিঘীরপাড়-খোকন ফফা,মোস্তফা,মাইদুল,সেলিম ভাই। ভবারবেড়-কবির,খলিল,কুদ্দুস, মাসুম,নওয়াব, ওসমান,শাহীন,খোকন, নুরু,শুকো,সেলিম। ছোট আঁচড়া-বাবলু ভাই,ইদ্রিস ভাই। গাজীপুর-নুপুর ভাই,শেখ আলম,লতিফ,লাল ভাই,ওহিদ ভাই। বড় আঁচড়া-হামিদ ভাই,ঘেনা ভাই। এ ছাড়াও আলী কদর,ভাদু ভাই,ইনামুল হক মুকুল,নাছির উদ্দিন,মোস্তাক আহম্মেদ স্বপণ,নওশের আলী,তৌহিদুর রহমান ও আসাদুজ্জামান আশা। মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড:-কামরুজ্জামান তরু(আহবায়ক,বেনাপোল পৌর সন্তান কমান্ড),মিয়াদ আলী(যুগ্ম-আহবায়ক),এনামুল হক জুয়েল,ওসমান আলী,শরীফ আহম্মদ,হাসেম আলী,লিটন হোসেন,বাবলু,আ.রহিম,মিল্টন হোসেন,জাহিদ হাসান,রিপন হাওলাদার,রাসেল হাওলাদার,ইয়াছিন হাওলাদার,শেখ ফরিদ,লাবু,পিংকি,জিল্লু,সুমন,সাধীন,সিয়াম সহ বেনাপোল,পুটখালী ও বাহাদুরপুর সন্তান কমান্ডের বীর সন্তানরা। দোয়া ও আলোচনা সভার সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন-সাবেক ছাত্রলীগ নেতা,সাংগঠনিক সম্পাদক(বেনাপোল পৌর আ.লীগ) ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড,কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য-ফারুক হোসেন উজ্জল(বেনাপোল পৌর মেয়র,মনোনয়ন প্রত্যাশী)।
ফারুক হোসেন উজ্জল বলেন, “বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ’৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশের হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেন, তার নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে যাচ্ছে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পর শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন একটি যুগান্তকারী ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা, তিনি গত চার দশকের বেশি সময় আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের দোয়া অনুষ্ঠানে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের মঙ্গল ও প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনার সুস্থ্যতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন-মুফতি আলমগীর জামিল(দারুস সালাম কওমি মাদরাসা,ভবারবেড় পশ্চিম পাড়া)। দিবসটি উদযাপণ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন দেশব্যাপী কর্মসূচি পালন করে চলেছে।